-উউহু,আমি বলতে চাই না। জানো ত-আজকাল অবস্থাটা কি। ইসলাম মানে আই সিস, আল কায়দা।জিজ্ঞেস করো না প্লিজ
এমনিতে বসন্তের রৌদ্বজ্জ্বল শনিবার সকালটা রবিশঙ্করের ধ্রুপদী আলাপ। মিঠে লাল রোদ আস্তে আস্তে সাদা ধূপের মতন ছড়াচ্ছে। দুপুর দুটোই বাড়ি ফেরার ফ্লাইট। সাকসেসফুল বিজনেস মিটিং, মিলিয়ান ডলার ভাবী কনট্রাক্টের হাতছানি ইত্যাদি মিলিয়ে উৎফুল্ল মন। ফুরেফুরে দিন, এতেব স্ফূর্তির উপযুক্ত মওকা।
আগের দিন রাতেই এসকর্ট পেজ থেকে গোটা তিনেক মেয়েকে টেক্সট করে, ডোরিয়ানকে শর্টলিস্ট করেছিল রঞ্জন। এই রাজ্যেও এসকর্ট সার্ভিস বেয়াইনি-পুলিশে ধরলে বেইজ্জতি। সেক্স অফেন্ডার হিসাবে পনেরো বছর নামটা থেকে যাবে ইন্টারনেট ডেটাবেসে। সুতরাং ক্রেতা এবং বিক্রেতা দুজনেই ছদ্মনামী।
রঞ্জন বোস মহিলার কাছে রায়ান বে। সকালে তিনটে টেক্সট, দুটো ফোনকল। টাইম-রেট-সাইট ফিক্সড। হোটেল শেরাটন। সকাল নটা। এই ব্যবসায় সকাল নটা কাকভোর। কেউ রাজী হলে হয়। এদিকে ফ্লাইট ধরার তাড়া। লটারীতে যা ওঠে-এই ভাবে এসকর্ট পেজগুলো থেকে একের পর ফোন নাম্বার তুলে মেশিনগান টেক্সিং করেছে রঞ্জন। শিখে ছিঁড়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ সুন্দরী ডোরিয়ান এর রিটার্ন টেক্সট।
-হোয়াট? নটা? আনহোলি টাইম। বাট আধঘন্টার মধ্যে রেডি হয়ে যাব। আসছ ?
আন্তারপ্রেনার কিলিং স্পিরিট। হাল ছেড়ে আজ বসে আছি আমি,. ছুটি নে কাহারো পিছুতে। মন নাহি মোর কিছুতেই, নাই. কিছুতে। ওই সব কাব্যিক স্পিরিট কাঙাল কবিদের । উদ্যোগী রঞ্চন বোস হাল ছাড়ার পাত্র নন। ওই ভাবে হাল ছাড়লে, কোন ব্যবসায় তার দাঁড় করাতে পারত না রঞ্জন।
চেক আউট করে শেরাটনের দিকে ড্রাইভ শুরু করার আগেই ডোরিয়ানের টেক্সট।
-ঠিক কটাই আসছ?
-জাস্ট বেড়োচ্ছি-মিনিট পনেরো লাগবে। রুম নাম্বারটা দাও।
-উহু আগে হোটেল চত্তরে এস। আমি এখনো রেডি হচ্ছি।
চারিদিকে এই ব্যবসা ঠেকানোর জন্য আন্ডারকভার পুলিশের যা ছড়াছরি। ফলত এই লাইনে ইন্ডিপেন্ডেডেন্ট মেয়েরা খুব সাবধানী। তবে রঞ্জনের ইন্ডিয়ান এক্সেন্টের জন্য মেয়েটা কনভিন্সড, কোন আইটির লোকজনই হবে। ইন্ডিয়ান এবং আইটি আমেরিকাতে সমার্থক শব্দ।
ডোরিয়ানের সাথে দেখা হতেই মেয়েটার গায়ের সুতীব্র সুগন্ধী তেলের গন্ধে রঞ্জন বিব্রত। কৃষ্ণাঙ্গী এসকর্ট জীবনে এই প্রথম। কিছুটা দায়ে । কালো মেয়েদের দেহের নিটোল গঠনের ফ্যান্টাসী যৌবনে বেশ ভাল মাত্রায় ছিল রঞ্জনের। কিন্ত সেটা প্রগ্রেসিভ না নেহাত জৈবিক- আজও অজ্ঞাত ওর কাছে । ছাত্রজীবনে বাম সংগঠনে ভীরে মেদিনীপুরের সাঁওতাল পট্টিতে এডুকেশন ক্যাম্পে যেত। দোহাতি সাঁওতালি ছাত্রী- সাদা শাড়ি লাল পেড়ে মেয়েগুলোর দেহ ত না-একদম চাবুক। কিন্ত শালার ভারতে ভালো লেগে হবেই বা কি-ইন্টু মিন্টু করতে গেলে মার খেয়ে মরার চান্স। সিরিয়াসলি নামাতে গেলে সভ্য সমাজে মুখ দেখানো কঠিন।
হ্যাঁ-ওর বন্ধুরা চে গুয়েভরার টি শার্ট মার্কা প্রগ্রেসিভ । তাতে কি? বর্ণ হিন্দুর সাথে সাঁওতাল রমনীর বিয়ে মানেই স্ক্যান্ডাল নইলে মাওবাদি কার্যকলাপ! ডোরিয়ান অবশ্য সাঁওতালীদের মতন এস্ট্রোমঙ্গলয়েড না। নোয়ামী ক্যাম্বেলের ধনুক শরীর-জ্যা এর মতন টেনে তীর ছোঁড়া যায় মন যদ্দুর যায়!
পেশাদার মেয়েরা পাঁচ মিনিট ও সময় নষ্টে আগ্রহী না। মিনিট ইজ মানি। ডোরিয়ান ওর শার্টটা খোলা শুরু করেছে-পাশে মোবাইলে স্টপ ওয়াচ ও শুরু। এই মেয়েগুলো ইনকলেও একঘন্টার কমে ক্লায়েন্ট নিতে অপরাগ। আপস্কেল মডেলদের একঘন্টার কমে পোষায় না। রঞ্জন জানে। কুড়ি মিনিটে খেল খতম হলেও টাকা যাবে ষাট মিনিটের। মনকে বোঝাচ্ছে -স্লো ডাউন! স্লো এন্ড রিল্যাক্স। স্লিপ। স্লপ বেবী।
কুড়ি মিনিটে ছটা পজিশন চেঞ্জ করতে করতে ব্যপারটা যখন আস্তে আস্তে র এবং বোরিং- রঞ্জনই তখন প্রস্তাবটা দিল।
-দেখ ব্যপারটা আস্তে আস্তে বেশ বোরিং হচ্ছে। চল তার থেকে বরং খেলা শেষ করে খোশ গপ্পো করি
-তুমি ত ক্লায়েন্ট। মর্জি তোমার।
একেত বয়স কিছুটা হয়েছে রঞ্জনের। দুই ছেলেমেয়েসহ চল্লিশে আসতেই সুমনা কেমন থিতিয়ে আজকাল। একসাথে শোয় নি বছর দুই হতে চললো। বড় জোর চুমু খাওয়া, নইলে একটু ঘসাঘসি। যেন এই চল্লিশে ওইটুকুই বরাদ্দ। সুমনা আবার আজকাল কোন মহারাজের কাছে যাচ্ছে বড্ড। এইসব মহারাজরাই মাথায় ঢুকিয়েছে হয়ত দুই বাচ্চার পর ভাইবোনের মতন থাকতে হয়! নইলে শ্রেফ ওর বায়োলজিতে নিচ্ছে না। আইদার ওয়ে, ভেবে লাভ নেই। এখন সংসার ধর্ম মানে মুখ বুঁজে ছেলে মেয়ে মানুষ করা। জৈবিক তাড়না নিয়ে ভেবে কি হবে - অ্যাঁ ?? কি আর হবে। এদিকে রঞ্জন নাস্তিক। নাস্তিকের জীবন ত একটাই। এইভাবে বৃথা যাবে? তাহলে শালা কনসাল্টিং এ এত টাকা করে লাভটাই বা কি?
ডোরিয়ান মেয়েটা পাঁচফুট সাত লম্বা। থার্টি ফোর বি। ক্রীয়াকর্ম শেষ। কিন্ত এখনো ত্রিশ মিনিট বাকী। এ অভিজ্ঞতাও নতুন না। বরং আদুল গায়ে নগ্নিকার সাথে প্রেমালাপ পর্বটিই অনেক সময় বেশী উপভোগ্য রঞ্জনের কাছে । ওর আঙুল এখন কৃষ্ণাঙ্গীর কমললেবু স্তনে আলতো করে অমৃতের সন্ধানে
-- তুমিত মোটেই স্লেভ এন্সেস্ট্রির নও। তোমার বাবা মা নিশ্চয় অন্যদেশ থেকেই এসেছেন?
- হু। বাবা মরোক্কান। মা আরবের।
-ঠিক কোন দেশের? প্যালেস্টাইন?
- খেপেছ। প্যালেস্টাইনের লোকজন ফর্সা। ওরা কালো মরোক্কানদের বিয়ে করে? মা, জর্ডনের।
- হু, মানে তুমিত পাক্কা মুসলমান
এই পর্যন্ত ভালোই টানছিল রঞ্জন। "তুমি ত মুসলমান" শোনা মাত্রই পালটে গেল মেয়েটার স্বর-ভঙ্গী।
-উউহু,আমি বলতে চাই না। জানো ত-আজকাল অবস্থাটা কি। ইসলাম মানে আই সিস, আল কায়দা।জিজ্ঞেস করো না প্লিজ।
অমৃতের সন্ধানে যখন গরল ওঠার বিস্তর সম্ভাবনা-কৃষ্ণাঙ্গীকে বুকে টেনে নিল রঞ্জন।
-ভয় নেই। মুসলমানদের আমি ঘৃণা করি না। আমার মুসলমান বন্ধু অনেক।
তাতেও চীড়ে ভেজে না। ডোরিয়ান স্বীকার করতে নারাজ ও মুসলমানী। কেমন বোবা বোবা দৃষ্টি। ওকে দোষ দিয়েই বা কি হবে। এটা ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থানের সময়। ইসলামোফোবিয়া তুঙ্গে। ডোরিয়ানের ক্লায়েন্টরা সবাই কি আর প্রগ্রেসিভ টাইপের। একটা দুটো রেড নেক ট্রাম্প সাপোর্টার থাকতেই পারে। গুলি চালানো বা পুলিশ ডাকা আশ্চর্য্যের কিছু না। সুতরাং ডোরিয়ান কিছুতেই বলতে চাইছে না ওর ধর্ম। রঞ্জন নতুন করে শুরু করে
-আচ্ছা তুমি এই লাইনে এলে কি করে। অনুমান করতে পারি, তোমার ফ্যামিলি ছিল ভীষন রক্ষনশীল।
রক্ষনশীল মুসলমান কথাটা ইচ্ছা করেই ব্যবহার করলো না রঞ্জন। তাতে উত্তর না পাবার সম্ভাবনাই বেশী।
-হূ। বাবা ছিল ভীষন কড়া। ছোট বেলায় ছিলাম ড্যাডিজ গার্ল।
দশ বছর হতেই বাবা পালটে গেল। বাড়িতেও হিজাব বাধ্যতামূলক। কোন ছেলের সাথে কথা হলে, দেখতে পেলেই ধমক। নইলে থাপ্পর।
- আশ্চর্য্য হচ্ছি না। কিন্ত সেখান থেকে এই লাইনে কেন?
- হ্যা? কেন আবার। নার্সিং পড়ি। পড়তে পয়সা লাগে না বুঝি?
-হা। নার্সিং ভালো জব। তাই টিউশন ফিও হাই। কিন্ত লোন নিয়েও পড়তে পারতে ত? এই রিস্কি লাইনে কেউ আসে?
- তোমার কোন আইডিয়া নেই। সতেরো বছর বয়স হতেই বাবা চাপ দিতে লাগলো মরোক্কোতে আমার এক কাজিনকে বিয়ে করে এই দেশে আনার জন্য। আমাদের একটা ছোট সাফাইএর ব্যবসা আছে। ভালো চলে না। বাবা একেত কালো, ইংরেজিটাও ভাল বলতে পারে না। ব্যবসা দেখাশোনা করার লোকের দরকার। ফলে বাবা আমার সেই কাজিনকে আনতে চাইছে। কাকুর ছেলে।
-তাই তুমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এলে। মানে নিজের জীবনের সন্ধানে?
- হু। মা পালাতে বললো। আসলে মা চায় নি, আমি সারাজীবন একজন পুরুষের দাসত্ব করি, মার খাই। যদিও মায়ের সাথেই সারাক্ষন ঝগড়া করতাম।
-তোমার মা জানেন এইসব?
- না। আমি কোথায় থাকি বাবা জানে না। জানলে হয়ত আমাকে মেরেই ফেলবে। হনার কিলিং এর কথা জানো ত? মা মাঝে মাঝে লুকিয়ে দেখা করে। দামী সেন্ট, দামী ড্রেস দেখে হয়ত সন্দেহ করে। অথবা হয়ত ইচ্ছা করেই করে না। হয়ত আমাকে স্বাধীন স্বচ্ছল দেখে মা খুশী। সারা জীবনত বাবার হাতে গালি আর মার খেয়েই কাটিয়েছে। তার থেকেত আমি ভাল আছিরে বাবা! মাকি সেটা বোঝে না। অহ যদি মায়ের জন্যও খরিদ্দার জোটাতে পারতাম-ওই হিংস্র বাপের চেয়ে যেকোন খরিদ্দার ভাল!!
তবে নার্সিং শেষ হলেই এসব ছেড়ে দেব। তখন চাকরি করব-টিউশনের টাকা জোটানোর তাগিদ থাকবে না।
-ছাড়বে? এখন সপ্তাহে কয়েক হাজার ডলার রোজগার তোমার। যা ফিগার বানিয়েছ, চল্লিশের আগে ডিমান্ডে ঘাটতি হবে না। একজন নার্সের মাসের রোজগার, সপ্তাহে করছ। এত ইজি ইনকাম সহযে ছাড়তে পারবে?
- ধ্যুস। ধ্যুস -দেখবে ঠিক আমার একটা ভাল সংসার হবে!
- হু সুন্দরী নার্সের, ডাক্তার বর-সাথে দুটি ছেলে মেয়ে!!
-ইয়ার্কি মারছ? ইনটার্ন গুলো সারা দিন আমার পাশে ছুঁক ছুঁক করে। শুধু কালো না, সাদা হবু ডাক্তারগুলোও
-ব্যস ঝুলে পড়। বাকী রেখেছ কেন?
-অত সহজ না বুঝলে। সবাই জানতে চায় বাবা মা কে, ফ্যামিলি কি ইত্যাদি। এদিকে বাবার কাছে যাওয়ার উপায় নেই। মা ভয়ে আসবে না। বাবা মা বেঁচে থাকতে ত আর তারা মারা গেছে বলতে পারি না। তার ওপরে মুসলমান হওয়ার হ্যাপাত আছেই!
- খৃষ্টান হয়ে যাও!
- মেয়েদের আবার ধর্ম কি! আমার নারীত্ব, এই যৌবন -যার টানে তুমি এখানে সেটাই আমার ধর্ম।
আমার খ্রীষ্ঠান বা মুসলিম ক্লায়েন্টরা কি ধর্ম দেখে বুকিং দেবে? তারা আসবে এই থার্টি ফোর বি এর টানেই।
আস্তে আস্তে স্তনযুগল রঞ্জনের মুখে ঘসে দিল দুষ্টুমি করে। ডোরিয়ানের স্তনগুলো সত্যিই লেবুর মতন সতেজ এবং টাইট। রঞ্জন যখন সেই আঘ্রান আর আস্বাদে বিভোর, কৃষ্ণাঙ্গী আস্তে আস্তে ওর অন্তর্বাসটা টেনে নিল যৌনাঙ্গের কাছে।
অন্তিম চুমু। খিল খিল করে হাঁসছে ডোরিয়ান
- বাই দ্য ওয়ে। ওই খ্রীষ্ঠান, ইসলাম সব কিছু তোমাদের। তোমাদের পুরুষদের তৈরী। কেন জান? নইলে দুনিয়ার সব মেয়েই হত স্লাট-- তোমাদের সব ইনকাম ঢুকতো আমাদের পকেটে। বিয়েটা হচ্ছে আমাদের বিনা পয়সায় খাটানোর ধান্দা।
রঞ্জনের মাথা বিয়ে, স্লাট, ধর্ম ইত্যাদি গোলক ধাঁধায় টসকে গোল গোল।
আস্তে আস্তে অন্তর্বাস পরে বিছানা থেকে উঠে গেছে ডোরিয়ান।
টিক টিক করে স্টপ ওয়াচ, ষাট মিনিটের শেষে বেজে চলেছে-ক্রিং ক্রিং।